রেষ্টুরেন্ট ব্যবসার আড়ালে অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারন: ব্লাকমেইল করে অর্থ আদায়
কুষ্টিয়া শহরে রেষ্টুরেন্ট ব্যবসার আড়ালে অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারন করে অর্থ আদায় করে আসছে প্রভাবশালী একটি চক্র। এ চক্রের ব্লাকমেইলের শিকার উঠতি বয়সী ছেলে-মেয়েরা নামপ্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অভিযোগ করেন, মজমপুরে ক্যাফে বাজারের মালিক ওয়াসিফ বারী চৌধুরী (লিখন) দীর্ঘ দিন ধরে তার ক্যাফেতে আসা ছেলে-মেয়ের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও ধারন করে। পরে সেই ভিডিও দেখিয়ে অর্থ আদায় সহ জিম্মি করে রাখেন তাদের। ক্যাফে হিসেবে তিনটি রুমে ছোট ছোট কয়েকটি গোপন কক্ষ রেখেছেন তিনি। এই কক্ষ গুলোতেই বিশেষ কায়দায় গোপন ক্যামেরা রাখা আছে। আর এতেই ক্যাফে আসা উঠতি বয়েসের ছেলে মেয়েদের ভিডিও ধারন করে রাখেন ক্যাফের মালিক লিখন। পরে তার ব্লাকমেইল চক্রের মাধ্যমে চলে অর্থ আদায়। ব্লাকমেইলের শিকার ভুক্তভোগীরা নিজের ইজ্জতের ভয়ে নিজের সর্বস্ব ও নানা উপায়ে টাকা দিয়ে আসছেন। এতেও রেহাই পাচ্ছেন না। ধারণকৃত ওই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দিতেও হুমকি দিয়ে আসছেন ক্যাফে মালিক। লিখনের এমন জিম্মি দশায় হতাশায় দিনকাটছে ভুক্তভোগী তরুণ-তরুণীদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্যাফে বাজারের এক সাবেক কর্মচারী বলেন, চাকরিতে ঢোকার পর থেকেই নানাভাবে হয়রানি করতেন। লিখন স্যার নেশা করতো। তবুও তার সামনে আমাকে অনাকারণে বসিয়ে রাখতেন। এছাড়াও এই ক্যাফেতে গেমিং জোন নামে একটি কক্ষ রয়েছে সেখানে উঠতি বয়সী ছেলে-মেয়েরা আসেন। একঘন্টা ৭শত টাকায় মিটিয়ে সেখানে তারা একান্ত সময় পার করেন। সময় বেশি হলে টাকার অংকটাও বেড়ে যায়। এর সুযোগে বিশেষ কায়দায় সেখানে গোপন ক্যামেরা রেখে তাদের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও ধারন করেন লিখন চৌধুরী। এরপরই ব্লাকমেইলের মাধ্যমে চলে অর্থ আদায়, দেন অনৈতিক প্রস্তাবও। রাজি না হলে ফেসবুকে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন তিনি। অনেকেই বাধ্য হয়ে একজন নারীর নিজের সর্বস্ব ও টাকাও দিতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্যাফে বাজারের আরেকজন সাবেক কর্মচারী বলেন,চাকরীতে ঢোকার পরই লিখন চৌধুরীর আসল চেহারা সামনে আসলো। তিনি যে এতটা বাজে লোক এটি আগে জানা ছিল না। তার এই ক্যাফেতে গেমিং জোনে এসব নোংরা কাজ হয় তা আগে জানা ছিল না। বিভিন্ন বয়সী তরুণ-তরুণীদের গেমিং জোন ওই কক্ষে গোপন ক্যামেরা রেখে তাদের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও ধারন করেন লিখন। তারপর ব্লাকমেইলের মাধ্যমে চলে অর্থ আদায়, দেন কু-প্রস্তাবও। শহরের ধনাত্ব ও প্রভাবশালী মিঠু চৌধুরীর ছেলে হওয়ায় তার বিষয়ে সবাই নীরব। আর এর সুযোগেই এসব অনৈতিক ব্যবসা তিনি দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে যাচ্ছে। তাই প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি ক্যাফে বাজার রেস্তোরাঁ ও তার মালিকের বিরুদ্ধে খতিয়ে দেখে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার।
এ বিষয়ে জানতে ক্যাফে বাজার রেস্তোরাঁর মালিক ওয়াসিফ বারী চৌধুরী লিখনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি কলটি রিসিভ করেননি।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত যেই হোক, কোন ছাড় দেওয়া হবে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।